রমজানে সেহেরি ও ইফতারের ফজিলত

islam o jibon news
রমজানে সেহেরি ও ইফতারের ফজিলত
লাল দ্রব্য দ্বারা নির্দিষ্ট সময়মতো ইফতার করা মহা সওয়াবের কাজ। এ সময় মহান মাবুদের দরবারে রোজাদার ব্যক্তির দোয়া-ফরিয়াদ কবুল হয়। নিজে একাকী ইফতার করায় যেমন সওয়াব রয়েছে তেমনি অন্যদের ইফতার করানোতে আরো বেশি ফজিলত ও পুণ্য রয়েছে।

রোজা শব্দটি ফার্সি ও উর্দু ভাষায় ব্যবহার হয়। রোজার আরবী পরিভাষা হলো সাওম। সাওম শব্দের অর্থ বিরত থাকা বা বিরত রাখা। মাহে রমজানুল মোবারকের সঙ্গে যে দুটো বিষয় সরাসরি সম্পর্কিত তার একটি হলো সেহেরি, দ্বিতীয়টি হলো ইফতার। এখানে এ দুই বিষয় নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।

সেহেরি : সেহেরি আরবি শব্দ। অর্থ শেষ রাত, দিবসের পূর্ব মুহূর্তে, দিনের প্রথমাংশসহ ইত্যাদি। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় মাহে রমজানের রোজা রাখার নিয়তে শেষ রাত বা সুবেহ সাদিকের পূর্ব মুহূর্তের পানাহারকে সেহেরি বলে। সেহেরি খাওয়া সুন্নাত এবং উত্তম কাজ। মহানবী হজরত (সা.) বলেন, ‘হে আমার উম্মতগণ! তোমরা সেহেরি খাবে। কেননা সেহেরির প্রতিটি লোকমার পরিবর্তে মহান আল্লাহ তায়ালা এক বছরের ইবাদতের সওয়াব দান করে থাকেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা ইহুদিদের বিপরীত কার্য কর। তারা সেহেরি খায় না, যদিও তারা রোজা রাখে। আর যে ব্যক্তি সেহেরি খেয়ে রোজা রাখে সে ইহুদিদের সংখ্যানুযায়ী সওয়াব পাবে। আর যারা সেহেরি খায় না তাদের চরিত্র ইহুদিদের চরিত্রের মতো হবে।’ সেহেরি খাওয়া হয় রোজা রাখার নিয়তে।

সেহেরির আরবি নিয়ত : নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম মিনশাহরি রামাদানাল মুবারাকি ফারদাল লাকা ইয়া আল্লাহু ফা তাকাব্বাল মিন্নি ইন্নাকা আনতাস্ সামিউল আলিম।

ইফতার : সারাদিন রোজা পালন শেষে নির্দিষ্ট সময় কোনোকিছু পানাহারের মাধ্যমে ইফতার (রোজা খোলা) করা অবশ্য কর্তব্য। সময়মত ইফতারে রয়েছে অশেষ সওয়াব, কল্যাণ ও বরকত। হজরত রাসুলে মকবুল (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘তোমরা ইফতারের সময় হওয়া মাত্র ইফতার করে নাও। এতটুকু বিলম্ব করো না, যেহেতু ইয়াহুদী ও নাসারাগণ বিলম্বে ইফতার করে থাকে।’
হালাল দ্রব্য দ্বারা নির্দিষ্ট সময়মতো ইফতার করা মহা সওয়াবের কাজ। এ সময় মহান মাবুদের দরবারে রোজাদার ব্যক্তির দোয়া-ফরিয়াদ কবুল হয়। নিজে একাকী ইফতার করায় যেমন সওয়াব রয়েছে তেমনি অন্যদের ইফতার করানোতে আরো বেশি ফজিলত ও পুণ্য রয়েছে। এ বিষয়ে ইমাম বায়হাকী (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত নবী করীম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে এক রোজাদার ও গাজীর তুল্য সওয়াব অর্জন করবে।’

ইফতারের দোয়া : ‘আল্লাহুম্মা লাকা ছুমুত ওয়াবিকা আমান্তু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালুত ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহেমীন।’

ফয়জুল আল আমীন
[ফয়জুল আল আমীন- ধ্রুপদী এক লেখক। পুরো নাম- সৈয়দ মুহম্মদ ফয়জুল আল আমীন। প্রবন্ধ-নিবন্ধ, কলাম, সাহিত্য সমালোচনা, গল্প, গবেষণা, কবিতা, ছড়াসহ সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় যার সুদীপ্ত বিচরণ। দেশের প্রথম শ্রেণির প্রায় সব দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ও ছোটকাগজে নিয়মিত লিখছেন প্রায় ২০ বছর ধরে। ধর্মচর্চার ক্ষেত্রে তাঁর গুরু হলেন বাবা। আর সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে প্রকৃতি। ইসলাম ধর্মের নানা দিক ও বিষয় নিয়ে সুদীর্ঘ গবেষণা করেছেন ফয়জুল আল আমীন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় রিপোর্টার, ফিচার লেখক, সাব-এডিটর, সহযোগী সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। একাধিক প্রকাশনা সংস্থায় সিনিয়র লেখক, সম্পাদক ও আরঅ্যা-ডি’র প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বর্তমানে www.ourislam24.com-এ অ্যাসোসিয়েট এডিটর ও পাঠকপ্রিয় একটি সাপ্তাহিকে চিফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।]
Previous
Next Post »