আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না, যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তায়ালার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর। (সুরা বাকারা : ১৮৫)।
ডাক্তার যদি রোজা রাখতে নিষেধ করে, তাহলে কী করবেন? |
উত্তর আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, রোজা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অনাহার-অর্ধাহারের এই চর্চা শরীর ভালো রাখে। রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্ত রাখে। তবে কেউ যদি রোগি হয়, ডাক্তার যদি রোজা রাখতে মানা করেন? তাহলে সে কি করবে?
কুরআনুল কারিম বলছে,
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلاَ يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُواْ الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ اللّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
রমজান মাসই হলো, সে মাস, যে মাসে নাজিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোজা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে।
আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না, যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তায়ালার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর। (সুরা বাকারা : ১৮৫)
এই আয়াতকে সামনে রেখে ইসলামি ফেকাহবিদদের অভিমত হলো, কেউ প্রকৃতপক্ষে রোগাক্রান্ত হলে, বিশেজ্ঞ দ্বীনদার ডাক্তার রোজা পালনে নিষেধ করলে, রোজা না রাখার অনুমতি আছে। এছাড়াও রোজা রাখলে রোগ প্রকট হবে বা সুস্থ হতে দেরির আশঙ্কা হলেও বিরত থাকতে পারবে। পরে সময় সুযোগ করে কাজা আদায় করে নিবে। কাফ্ফারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। আবার কেউ যদি শক্তিহীন বৃদ্ধ হয়, রোজা রাখার সামর্থ্যবান না হয়, শরীরের ক্ষতি হয় তার জন্যও রোজা না রাখার অনুমতি আছে। পরে যদি পালনের সুযোগ আসে রোজা আদায় করবে। বার্ধক্য আরও বৃদ্ধি পেলে বা সক্ষমতা না আসলে অবশ্যই কাফ্ফারা আদায় করবে। কাফ্ফারা মানে মিসকিন, গরিব বা অসহায় পেট ভরে খানা খাওয়ানো বা সদকাতুল ফিতর পরিমাণ দান করা। শক্তিহীন বৃদ্ধের ছাড়ের অনুমতি প্রসঙ্গে কুরআনের ভাষ্য হলো,
وَلَا تَقْتُلُوا أَنْفُسَكُمْ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا
তোমরা নিজেদের হত্যা কর না। আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের প্রতি দয়াশীল। (সুরা নিসা ২৯)
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন,
وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ
তোমরা নিজেদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিও না। (সুরা বাকারা ১৯৫)
কেউ রোগি না হয়ে রোগের ভান করলে, বৃদ্ধ সামর্থ্যবান হয়ে রোজা না রাখলে জঘন্য অপরাধ হবে। কবিরা গোনার শাস্তি হবে।
মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব
সিনিয়র বিভাগীয় প্রধান, আমাদের অর্থনীতি
Sign up here with your email
ConversionConversion EmoticonEmoticon