জিনের অস্তিত্ব অস্বীকার করলে গোনাহ হবে |
জিন নিয়ে সমাজে নানা রকম তর্ক রয়েছে। রয়েছে হাজারও গল্প কিসসা কাহিনী। একদল জিনের অস্তিত্ব বিশ্বাস করেন আরেক দল করেন না। অনেকে বিষয়টি জানার পরও অস্বীকার করেন। এটি আদৌ উচিত কিনা। শরিয়ত কী বলে?
এক্ষেত্রে শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, মুসলিমদের অবশ্যই জিনের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। কেউ যদি এতে অস্বীকার করে, তাহলে সে মুমিন থাকবে না। মূলত জিনের অস্তিত্ব স্বীকার ঈমান বিল গায়েব বা অদৃশ্যের প্রতি ঈমান আনার অন্তর্ভূক্ত। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আল কুরআনে সুষ্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন জিনের ব্যাপারে। প্রায় পঞ্চাশটি জায়গায় স্পষ্ট করে তাদের সৃষ্টি, সৃষ্টির উদ্দেশ্য, ধর্ম, মানুষের পূর্বে তাদের সৃষ্টি করা, ইবলিস জিনের অন্তর্ভূক্ত, জিন ও মানুষকে এক সাথে সম্বোধন, জিনদের কাজ-কর্ম করা, হাশরের দিনে বিচার ইত্যাদি বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং সুষ্পষ্ট বর্ণনার পরও কেউ জিন বা মহাশূন্যের অন্যান্য প্রাণীকে অস্বীকার করলে তার ইমানের উপর দুর্বলতা তৈরি হবে।
এই জিন সম্পর্কে বলতে গিয়ে সূরা আল-জিন নামে একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা নাজিল করেছেন আল্লাহ। তাই জিনের অস্তিত্ব অস্বীকার করা আল্লাহর কালামকে অস্বীকার করারই শামিল। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা এটিই। তবে বিলুপ্ত মুতাজিলা ও জাহমিয়্যা সমপ্রদায় জিনের অস্তিত্ব স্বীকার করে না।
এখনকার সমাজে একটা প্রচলিত ধারণা আছে, মানুষ ইন্তেকাল করলে ভুত হয়ে যায়। আদৃশ্য আকৃতি ধারণ করে আমার ফিরে আসে পৃথিবীতে। এগুলো মানুষের বানোয়াট কাহিনী। জিন নিয়ে এরকম নানারকম ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে সমাজে। যার কোনো ভিত্তি নেই। বরং এ ধরনের বাজে ধারনা বা চিন্তাও গোনাহর ভেতর শামিল।
মহান আল্লাহ প্রদত্ত আসমানি ৪ কিতাবেই জিনের ব্যাপারে আলোচনা রয়েছে। সুতরাং যারা আসমানি কিতাবে বিশ্বাসী- ইহুদি, খৃস্টান ও মুসলমান, তারা সবাই জিনের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন। পৌত্তলিক অনেক দার্শনিক ও বস্তুবাদী গবেষকরাও জিনের অস্তিত্ব অস্বীকার করে না। দার্শনিকদের একটি দল বলে থাকে, ফেরেশ্তা ও জিন রূপক অর্থে ব্যবহার করা হয়। সুন্দর চরিত্রকে ফেরেশতা আর খারাপ চরিত্রকে জিন বা শয়তান শব্দ দিয়ে বুঝানো হয়। অবশ্য তাদের এ বক্তব্য কুরআন ও সুন্নাহর সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
মাওলানা রোকন রাইয়ান
লেখক : সহ-সম্পাদক, ইসলামি চিন্তার কাগজ
Sign up here with your email
ConversionConversion EmoticonEmoticon